এইচ, আই, ভি/ এইডস

  • by

এইচ, আই, ভি/ এইডস

যোগাযোগকারীর জানার বিষয়

এক্যুয়াড ইম্যুনো ডিফিসিয়েন্সি সিনড্রোম বা সংক্ষেপে এইডস একটি নতুন বিশ্বজোড়া সমস্যা। যে ভাইরাস এইডস ঘটায় তার নাম হিউম্যান ইম্যুনো ডিফিসিনেন্সি ভাইরাস বা সংক্ষেপে এইচ আই ভি।

পৃথিবীর প্রতিটি জাতি এইডস এর হুমকির সম্মুখীন এইচ, আই, ভি। আক্রান্ত হয়ে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। দুই হাজার সাল নাগাদ সার বিশ্বে ৩-৪ কোটি লোক হয়তো এইচ, আই, ভি জীবাণুতে আক্রান্ত হবে।  এইচ, আই ভি দ্বারা আক্রান্ত হলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হযে মানুষ মারা যায়। জানা মতে এইডস এর এখন পর্যণ্ত কোন চিকিৎসা নেই।

এই অধ্যায়ে বর্ণিত ছয়টি স্বাস্থ্য বার্তার মাধ্যমে সবাই এইচ, আই ভি / এইডস সম্পর্কে জানলেও বসেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে, ভবিষ্যতে এই দুঃখজনক ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যেতে পারে।

এই মুহূর্তে স্বভাবের আচরণের পরিবর্তন ই হলো এইডস এর বিস্তার রোধে একমাত্র কার্যকর অস্ত্র। এই কারণে বিশ্বের সব দেশে সব মানুষের এইডস রোগ এড়ানো ও এইচ, আই ভির জীবাণুর বিস্তার রোধের উপায় জানতে হবে।

মূল বক্তব্য

১। জানা মতে, এইডস এর এখন পর্যন্ত কোন চিকিৎসা নেই। এক ধরনের ভাইরাস (এইচ, আই ভি) র কারণে এইডস হয়, যা সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে অসাবধান যৌনসঙ্গম, সংক্রামিত রক্তের মাধ্যমে এবং এইডস আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে শিশুর দেহে বিস্তার লাভ করে।

২। সংযম অথবা নিরাপদ যৌন সঙ্গমের ব্যবস্থা নিলে যৌন সম্পর্কের দ্বারা এইচ, আই, ভি র বিস্তার রোধ করা যেতে পারে। নিরাপদ যৌনচর্চা হলো বিশ্বস্ত একগামী সম্পর্ক অর্থ্যাৎ শুধু স্বামী স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক অথবা উৎকৃষ্ট মানের কনডম ব্যবহার করা।

৩। এইচ, আই, ভি র জন্য পরীক্ষা না করে রক্ত পরিসঞ্চালন করা বিপজ্জনক।

৪। জীবাণুমুক্ত না করে সুঁচ অথবা সিরিঞ্জ, ত্বক ছেদনকারী যন্ত্র অথবা চিকিৎসার যেকোন সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা বিপজ্জনক।

৫। এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত মায়ের দ্বারা তার শিশুর  সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। এই রোগ সংক্রমণ থেকে সকল বাবা মাকে অথবা ভবিষ্যতের বাবা মা কে প্রতিরোধ করতে পারলে, শিশুদের মধ্যে এই রোগের বিস্তার বন্ধ করা যাবে।

৬। এইচ, আই, ভি কিভাবে বিস্তার লাভ করে সে সম্পর্কে সব বাবা মায়ের জন্য উচিত এবং কি করে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায় সেই উপায়ে তাদের সন্তানকে জানানোর দায়িত্ব নেয়া উচিত।

সহায়ক তথ্য

১        জানা মতে, এইডস এর কোন চিকিৎসা নেই। এক ধরনের ভাইরাস (এইচ, আই, ভি) র কারণে এইডস হয় যা সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে অসাবধান যৌনসঙ্গম, সংক্রামিত রক্তের মাধ্যমে এবং এইডস আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে শিশুর দেহে বিস্তার লাভ করে।

  • হিউম্যান ইম্যুনো ডিফিসিয়েন্সি ভাইরাস বা সংক্ষেপে এইচ, আই, ভি নামে পরিচিত ভাইরাস এইডস এর কারণ। এইচ, আই, ভি দেহের রোগ প্রতিরোধ (ইম্যুন সিস্টেম) ব্যবস্থা নষ্ট করে দেয়। এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ অন্যান্য কোন মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ করতে পারে না বলে রোগী মারা যায়।
  • এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত হলেও সাধারণতঃ অনেক বছর ধরে ঐ ব্যক্তির শরীরে রোগের কোন লক্ষণ দেখা যায় না। এই সময় রোগীকে স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যবান মনে হতে পারে। কিন্তু এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যের দেহে এই রোগ ছড়িয়ে দিতে পারে।
  • এইচ, আই, ভি সংক্রমেণের চূড়ান্ত পরিণতি হলো এইডস। এইচ, আই, ভি তে প্রথম আক্রান্ত হবার পর থেকে এইডস হতে ৭ থেকে ১০ বছর লাগতে পারে। বর্তমানে এইডসের কোন চিকিৎসা নেই। তবে কিছু ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে যা দিয়ে এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর বেশ কিছুদিন সুস্থ রাখা যায়।
  • কারো এইচ, আই, ভি সংক্রমণ ঘটেছে সন্দেহ হরে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। কি করে অন্যের দেহে এই রোগের বিস্তার রোধ করা যায় এবং নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হয়, সে সম্পর্ক এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জানা খুবই জরুরী।
  • শুধুমাত্র কিছু সীমিত উপায় একজনের থেকে অপরজনের দেহে এইচ, আই, ভি বিস্তার লাভ করতে পারেঃ
  • অসাবধান যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে যখন আক্রান্ত ব্যক্তির দেহরস অপরের দেহে প্রবেশ করে। এভাবে পুরুষ থেকে পুরুষে, পুরুষ থেকে মহিলায় এবং মহিলা থেকে পুরুষের শরীরের এইচ, আই, ভি চলে যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী প্রতি দশজন এইডস রোগীর মধ্যে নয়জনের দেহেই যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে এইচ, আই, ভি বিস্তার লাভ করেছে।
  • জীবাণুমুক্ত না করে সুঁচ ও সিরিঞ্জ ব্যবহার করে ইনজেকশন নিলে।
  • রক্ত এইচ, আই, ভির জন্য পরীক্ষা করা না হয়ে থাকলে, সেই রক্ত পরিসঞ্চালনের মাধ্যমে।
  • এইচ, আই, ভি আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে তার শিশু এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত হয়।
  • এইচ, আই, ভি আক্রান্ত ব্যাক্তির কাছে এলে কিংবা তাকে স্পর্শ করলেই এইচ, আই, ভি ছড়ায় না। আলিঙ্গন, করমর্দন, কাশি এবং হাঁচির মাধ্যমেও এইচ, আই, ভি ছড়ায় না। এইচ, আই, ভি টয়লেট / ল্যাট্রিন, টেলিফোন, থালা, গ্লাস, চামচ, তোয়ালে, মশা, কাপড়, বিছানার চাদর, অথবা পুকুরের পানির মাধ্যমেও ছড়ায় না।
  • এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি নয়।

সংযম অথবা নিরাপদে যৌনসঙ্গমের ব্যবস্থা নিলে যৌন সর্ম্পকের দ্বারা এইচ, আই, ভি তে বিস্তার রোধ করা যেতে পারে। নিরাপদ যৌনচর্চা হলো বিশ্বস্ত একগামী সম্পর্ক অর্থ্যাৎ শুধু স্বামী স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক অথবা উৎকৃষ্ট মানের কনডম ব্যবহার করা।

  • এইডস আক্রান্ত জুটির / দম্পতির বিশ্বস্ত সম্পর্ক উভয়কে এইচ, আই, ভি থেকে রক্ষা করতে পারে।
  • আপনার যত বেশি যৌনসঙ্গী থাকে তাদের যেকোন একজনের এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি এবং আপনিও আক্রান্ত হতে পারেন। আপনার সঙ্গীর যদি আরো অনেক যৌনসঙ্গী থাকে, তবে সেও এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত হতে পারে এবং আপনিও আক্রান্ত হতে পারেন।
  • যাদের যৌন রোগ আছে অথবা ঘা বা প্রদাহ আছে, তাদের এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং তা অপরের দেহে বিস্তার লাভ করতে পারে। সে জন্য সাথে সাথে জনন অঙ্গের প্রদাহের চিকিৎসা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • যদি আপনি ও আপনার সাথী শুধু নিজেদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক সীমাবদ্ধ রাখেন এবং নিশ্চিত হন যে আপনার কেউ আক্রান্ত ননা, তবে নিরাপদ যৌন চর্চার মাধ্যমে এইচ, আই, ভি র ঝুঁকি কমাতে পারেন। নিরাপদ যৌনচর্চার অর্থ হলো চুমু এবং আলিঙ্গন অথবা প্রতিবার যৌনসঙ্গমের সময় নিয়ম অনুযায়ী উৎকৃষ্টমানের কনডম ব্যবহার করা।
  • এ ধরনের ঝুঁকি এড়ানোর আরেকটি উপায় হলো যৌনসঙ্গম থেকে বিরত থাকা।

৩       এইচ, আই, ভি র জন্য পরীক্ষা না করে রক্ত পরিসঞ্চালন করা বিপজ্জনক।

  • রক্তের মাধ্যমে এইচ, আই, ভি বিস্তার লাভ করতে পারে। সংক্রামিত ব্যক্তির রক্ত সংগ্রহ করে যদি সেই রক্ত অন্য কেন ব্যক্তিকে দেয়া হয়, তাহলে এই ভাইরাস বিস্তৃত হবে। যখনই সম্ভব একজন স্বেচ্ছায় রক্তদানকারীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করা উচিত এবং এইচ, আই, ভি র জন্য পরীক্ষা করা উচিত।
  • রক্তদানের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি এইচ, আই, ভি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় না।

৪        জীবানুমুক্ত না করে সুঁচ অথবা সিরিঞ্জ, ত্বক ছেদনকারী যন্ত্র অথবা চিকিৎসার যেকোন সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা বিপজ্জনক।

  • কোন ব্যক্তিকে ইনজেকশন দিলে তার দেহ থেকে খুব সামান্য পরিমিাণে রক্ত সূঁচ বা সিরিঞ্জ চলে আসে। যদি ঐ ব্যক্তির রক্তে এইচ, আই, ভি থাকে এবং যদি তার দেহে ব্যবহৃত সুঁচ বা সিরিঞ্জ জীবাণুমুক্তনা করে অন্যের দেহে ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেই সাথে এইচ, আই, ভি প্রবেশ করতে পারে।
  • ইনজেকশনের মাধ্যমে অন্যান্য ওষুধ দেয়া প্রায়শঃই অপ্রয়োজনীয়, কারণ অনেক কার্যকর ওষুধই খাওয়া যায়। নিতান্ত প্রয়োজন হলে, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ব্যক্তির মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত সুঁচ ও সিরিঞ্জ ব্যবহার করে ইনজেকশন দেয়া উচিত।
  • যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করা না হলে কানের ছিদ্র করা, দাঁতের চিকিৎসা এবং আকুপাংচার নিরাপদ নয়। নাপিতের কাছে গিয়ে জীবাণুমুক্ত ব্লেড ব্যবহার না করে দাড়ি কামানোও নিরাপদ নয়।
  • যে সব লোক নিজের দেহে ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে তাদের বিশেষ করে এইডস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য গ্রহণকারী ব্যক্তির সাথে যৌনসঙ্গম করলেও এইডস বিস্তার লাভ করতে পারে।
  • জাতীয় টিকাদান কার্যক্রমে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ প্রতিবার ব্যবহারের আগে জীবাণুমুক্ত করা হয় বলে তা নিরাপদ।

৫       এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত মায়ের দ্বারা তার শিশুর সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। এই রোগ সংক্রমণ থেকে সকল বাবা মাকে অথবা ভবিষ্যতের বাবা মাকে প্রতিরোধ করতে পারলে, শিশুদের মধ্যে এই রোগ বিস্তার বন্ধ করা যাবে।

  • এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত মহিলা গর্ভবর্তী হলে এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত শিশু জন্ম দেয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি। অধিকাংশ এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত শিশু তিন বছর বয়সের আগেই মারা যাবে। যদি শুধু পুরুষ আক্রান্ত হয় তাহলে গর্ভবর্তী হওয়ার সময়ও ঐ মহিলা যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মা ও শিশু উভয়ের ঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে।
  • যদি শুধুমাত্র পুরুষ এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত হন, সেক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন সঙ্গমের ফলে কোন মহিলা গর্ভবর্তী হতে চাইলে মা ও শিশুর এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
  • এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত স্বামীর কাছ থেকে এইচ, আই, ভি সংক্রমণ প্রতিরোধের অধিকার স্ত্রীর রয়েছে। শিশুর এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকলে গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকার অধিকার সকল স্ত্রীর রয়েছে।
  • এইচ, আই, ভি আক্রান্ত সন্দেহ করে যে তার এইচ, আই, ভি থাকতে পারে তার সন্তান গর্ভধারণ তেকে বিরত থাকা উচিত।

৬        এইচ, আই, ভি কিভাবে বিস্তার লাভ করে সম্পর্কে সব বাবা মায়ের জানা উচিত এবং কি করে এইরোগ প্রতিরোধ করা যায় সেই উপায় তাদের সন্তানকে জানানোর দায়িত্ব নেয়া ‍উচিত।

  • কিভাবে এইচ, আই, ভি তে আক্রান্ত হওয়া এড়ানো ও বিস্তার রোধ করা যায় সে সম্পর্কে জেনে আপনি নিজেকে, আপনার যৌন সঙ্গীকে এমনকি আপনার শিশুকেও রক্ষায় সাহায্য করতে পারেন।
  • বাংলাদেশের সবাই নতুন প্রজন্মের মধ্যে এইচ, আই, ভি বিস্তার রোধে সাহায্য করতে পারে।

বিশেষ প্রয়োজনেঃ 

আপনার যে কন সময় এম্বুলেন্স সার্ভিস দরকার হতে পারে। যে কোন ধরনের এম্বুলেন্স সার্ভিস পেতে হলে খালেদ এম্বুলেন্স সার্ভিস এ যোগাযোগ করুন। অথবা কল করুন এখনই ০১৯৩৩২৪৬৫৭৭ – এই নাম্বারটি মনে রাখুন অথবা আপনার মোবাইল এ সেভ করুন এখনই। kmosarrof@gmail.com

আমাদের এম্বুলেন্স সার্ভিস ভিজিট করুনঃ https://khaledrentacar.com/ambulance-service/