ফ্যামিলি

  • by

ফ্যামিলি

 

সাফারির রোমাঞ্চকর অভিযানে একা কেন বেরোবেন, সঙ্গে নিন পরিবারের সকলকে। ভারতের বিভিন্ন জঙ্গল ও রাজস্থানের মরুভূমিতে চিপ, এলিফ্যান্ট আর ক্যামের সাফারিতে আপনার সঙ্গী আশোক মান্না ও তানাজী সেনগুপ্ত।

 

জিপ সাফারি।

 

’দি ল্যান্ড অফ টাইগার’ হিসেবে খ্যাত বান্ধবগড়।  ন্যাশনাল পার্ক কার সাফারির জন্যে বেশ পরিচিত।  মধ্যপ্রদেশের এই জাতীয় উদ্যান ৪৪৯ স্কোয়ার  মিটার জুড়ে এক সুবিস্তৃত সংরক্ষিত বনাঞ্চল। একে ঘিরে আছে বিন্ধ্য পর্বতের বত্রিশটি ছোট –বড় পাহাড়।  বাঘ ছাড়াও এখানে আছে নানা বন্যপ্রাণী। শম্বর, চিতল, বন্য শুয়োর, নীলগাই, চিঙ্কারা, চিতাবাঘ, প্যান্থার, হরিণ ও হায়না।  আছে  নানারকম পাখি এবং অসংখ্য প্রজাতির প্রজাতি। । চারদিকে রয়েছে শাল, আমলকী, মহুয়া, কেন্দু, বহেড়া গাছের  সারি।  গহিন জঙ্গল, ঘন ঘাস- মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে চরণগঙ্গা নদী । ওয়াটার হোল বা জলাশায় রয়েছে অনেক।

বান্ধবগড় ন্যাশনাল পার্কের ১০৫ বর্গকিমিতে ঘোরা যায় স্বচ্ছন্দে।  জিপ সাফারিতে একদিকে মেলে জঙ্গল ঘোরার আনন্দ, অন্যদিকে রোমাঞ্চও মেলে কম নয়।  ১৫ অক্টোবর থেকে ত্রিশ জুন পর্যন্ত এই সাফারিতে চলে দু’বার- সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছ’টার মধ্যে এবং দুপুর আড়াইটে থেকে চারটে মধ্যে। প্রথমবার সাড়ে চার ঘন্টার জন্য, বিকেলে তিন ঘন্টার জন্যে।  স্থানীয় রিসর্ট মালিক এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় এই সাফারিতে একটি জিপে পাঁচজন যাত্রী নেওয়া হয়, সঙ্গে থাকেন কর্তৃপক্ষ ‍নিযুক্ত একজন গাইড । তিনটি পার্ক সাফারি জোন আছে – তাল জোন (গেট ১) মাগদি জোন (গেট -২) ও পার্কে ঢুকে  এই জিপ সাফারিতে অংশ নিন।

কী ভাবে যাবেন: হাওড়া থেকে মুম্বই মেলে কাটনি আসুন, সেখান থেকে জিপে বান্ধবগড়।

কোথায় থাকবেন: বান্ধবগড়ে প্রচুর বাজেট হোটেল আছে। আছে থ্রি স্টার, ফোর স্টার ও লাক্সারি রিসর্ট।

কখন যাবেন: অক্টোবর থেকে মে মাস।

 

এলিফ্যান্ট সাফারি

 

গুয়াহাটির উত্তর-পূর্বে ব্রক্ষপুত্রের ধারে গড়ে উঠেছে। কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান। ভারতীয় একশৃঙ্গী গন্ডারের জন্যে কাজিরাঙা আজ বিশ্বখ্যাত। শুধু মাত্র বিভিন্ন ধরনের বন্য জন্তজানোয়ার  দেখার লোভেই নয় প্রকৃতির অনন্য রূপ সৌন্দর্য দেখার লোভেইও বহু প্রকৃতিপ্রেমিক কাজিরাঙ্গায় ছুটে আসেন।  এত গন্ডায় একসঙ্গে বিশ্বের আরও  কোনও ন্যাশনাল পার্কে দেখতে পাওয়া যায় না।  শুধু গন্ডারই নয় এখানে দেখতে পাবেন বাঘ, হাতি, বাইসন ইত্যাদি জন্তু এবং নান প্রজাতির অসংখ্য হরিণ। এসব দেখার জন্যে সরকারি তরফে রয়েছে জিপ এবং হাতি সাফারির ব্যবস্থা। বনবিভাগের জিপ বা হাতির পিঠে  সওয়ার হয়ে বার্ড ওয়াচিং ট্যুরে অংশ নিতে পারেন। পার্কের নান রেঞ্জ থেকে এই সাফারি শুরু হয়।  সকাল পাঁচটায় বনবিভাগের জিপ বা মিনিবাসে তিন কিমি গিয়ে মিহিমুখ হাতি পয়েন্ট থেকে হাতির পিঠে চড়ে বন্যজীবজন্ত দেখার ব্যবস্থা আছে।  ট্যুরিস্ট লজের কাছেই বনবিভাগের  অফিসে বুকিং করে নিন। হাতি সাফারির চাহিদা খুব বেশি।  তাই আগেভাগে বুক করে নিন।  সকাল পাঁচটা এবং ছটায় ঘন্টাখানেকর এই সফরে গোটা পঁচিশেক হাতি যাচ্ছে জঙ্গলের খাল বিল জলায়। ছ মিটার উচু শরবনের  ভিতর দিয়ে দুলকি চালে হাতি চলেছে গান্ডারের সাম্রাজ্যে।  এভাবে যেতে যেতে চোখে পরবে নানা ধরনের পাখি এবং পরিযায়ী হাঁস।  হরিণের পালও চোখে  পড়া বিচিত্র কিছু নয়। এখানে বিলের ধারে প্রায় মানুষ সমান ঘাস জন্মায়।  এই ঘাস বনেই বিশাল দেহ নিয় একশৃঙ্গী গন্ডার।  নির্ভয়ে মনের আনন্দে ঘাস খেয়ে বেড়ায়।

কীভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে অসমগামী যে কোন ট্রেনে গুয়াহাটিতে নামুন। সেখান থেকে বাসে বা গাড়িতে চজলে আসুন কাজিরাঙায়। নিকটতম বিমানবন্দর  জোড়হাট।  কলকাত থেকে বিভিন্ন সংস্থার বিমান এখানে আসে।

কোথায় থাকবেন: অসম পর্যন্টন বিভাগের অনেকগুলি ট্যুরিস্ট লজ আছে কাজিরাঙ্গায়।  উল্লেখযোগ্য কয়েকটি: প্রশান্তি ট্যুরিস্ট লজ, অরণ্য লজ, বনশ্রী লজ, প্রভৃতি।

 

কখন যাবেন: নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কাজিরাঙায় যেতে পারেন।  আগে বুকিং  করে নেবন।