বর্ষাকালের অসুখ – বিসুখ

  • by

বর্ষাকালের অসুখ – বিসুখ

  • ডা. ওয়ানাইজা

বর্ষার পানির প্রবাহে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার হলেও এর ক্ষতিকর দিকটাই বেশি। জলাবদ্ধতার কারণে পানি দূষণ হয়ে ডায়রিয়া, কলেরা, আমারশয়, টাইফয়েড, জ্বর, জন্ডিস ও কৃমির সংক্রমন ঘটায়।

ডায়রিয়া, আমাশয় ও কলেরা : যেকোন বয়সেই ডায়রিয়া হতে পারে। প্রথম দিকে টেটে ভুটভাট শব্দ, খাবরে অনীহা, ঘন ঘন পাতলা পায়খানা এবং বমি বা বমি বমি ভাব হয়। ফলে রোগী দ্রুত পানিশূণ্যতায় ভোগে। দ্রুত চিকিৎসা না নিলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

আমাশয় হলে তলপেট ব্যাথা, বারবার অল্প অল্প দুগর্ণ্ধযুক্ত পিচ্ছিল পায়খানা, কখনো বা রক্তমিশ্রিত পায়খানা এবং জ্বরও থাকতে পারে। এমন হলে প্রচুর বিশুদ্ধ পানীয় খাওয়াতে হবে। প্রতিবার পাতালা পায়খানার পর খাবার স্যালাইন দিতে হবে। প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে।

বিশুদ্ধ পানিঃ এ জন্য পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। ফুটানোর ব্যবস্তা না থাকলে ফিটকিরি বা পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি দিয়েও পানি জীবানুমুক্ত করা যায়। যারা বাড়ীতে ফিল্টার ব্যবহার করেন তারা আগে পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে তারপর ফিল্টারে ঢালবেন।

টাইফয়েড জ্বর ঃ  এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক নির্ধারিত সময়ে খেতে হবে। গা ব্যাথা ও জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে হবে।  এ সময় লেবুর রস ও শরবত প্রচুর খাবেন।

লিভারের অসুখ ঃ সাধারণত এ ও ই ভাইরাস দিয়ে এ সময় জন্ডিস হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছিদ্রযুক্ত পানির পাইপ দিয়ে বাইরের নোংরা পানি মিশে এ রোগের জীবানু ছড়ায়। যে কেউ জন্ডিসে আক্রান্ত হতে পারে, তবে যারা বাইরের খাবার ও পানীয় খায় তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কখনোই পুকুরের পানি পান করবেন না। জন্ডিসের প্রধান চিকিৎসা বিশ্রাম। িএ সময় সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উচিত। কোষ্ঠ যেন পরিষ্কার থাকে সে দিকে লক্ষ রাখবেন।

কৃমি ঃ বর্ষায় কৃমি সংক্রমন সাধারণ ঘটনা। যেখানে স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত নয়, যেখানে মল বর্ষার পানিতে মিশে একাকার হয়ে কৃমির জীবাণূ শরীরে প্রবেশ করে। এ ক্ষেত্রে পেটে ব্যাথা, হজমে গন্ডগোল, খাবারে অরুচি, বমি ভাব ও মলদ্বার চুলকানি হয়। বৃষ্টিভেজা আদ্র পরিবেশ ফাঙ্গাস জন্মানোর জন্য উপযুক্ত। এ সময় শরীর ঘেমে গেলে বগল, অর্ন্তবাসের ভেতর ও পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঙ্গাস দেখা যায়। এদের অ্যাথলেটস ফুট, জোকস ইচ, ন্যাপিরোশ বলে। এ রোগের উপসর্গ হচ্ছে শরীরে খুব চুলকানি।

করণীয়

প্রতিদিন পা, আঙুলের ফাঁক, নখের গোড়া ভালো করে সাবান দিয়ে পরিস্কার করতে হবে। ধোয়ার পর টাওয়াল  দিয়ে ভেজা স্থান মুছে ফেলতে হবে। বৃষ্টির দিনে গামবুট, বন্ধ প্লাষ্টিকের জুতো ব্যবহার না করা ভালো। কারণ এতে পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঙ্গাসের আক্রমন বেড়ে যেতে পারে। খোলা স্যান্ডল বা স্যান্ডেল সু ব্যবহার করা উত্তম। জুতো পরতেই হলে চামড়ার জুতো ও সুতি মোজা পরা যেতে পারে। নখ কেটে ছোট রাখতে হবে। না হলে নখের গোড়া ভিজে ফাঙ্গাসের আক্রমন হতে পারে। হাঁড়ি পাতিল পরিষ্কারের পর সাথে সাথে হাত মুছে ফেলতে হবে। পারলে ভেতরে তুলো বা সুতি কাপড়ের আবরণ দেয়া গ্লাভস পরে এ কাজ কারা যেতে পারে। মাথার চুল শ্যাম্পু করে শুকনো রাখতে হবে। এতে করে চুলের গোড়ায় ফাঙ্গাস বাসা বাঁধার সুযোগ পাবে না। টাইট অর্ন্তবাস বা ব্রা ব্যবহার করা উচিত নয়। কোমরে টাইট করে পেটিকোট পরাও উচিত নয়।

মনে রাখবেন, ফ্যাঙ্গাস একজনের থেকে অন্যজনে দ্রুত ছড়ায়। তাই এ সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বর্ষাকালে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে বেশি। কারণ বর্ষার পানিতে থাকে নানা ধরনের জীবাণু। প্রতিদিন সাবান দিয়ে গোসল করতে হবে। হাত পায়ে নোংরা পানি লাগলে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। আপনার জন্য কোন সাবানটি উপকারী তা চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন।

লেখিকা ঃ সহযোগী অধ্যাপিকা, ফার্মাকোলজি অ্যান্ড থেরাপিউটিক্স, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ।

চেম্বার ঃ স্ট্যান্ডার্ড মেডিক্যাল সার্ভিস লিমিটেড,

২০৯/২, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা।

ফোন ঃ ০১৬৮২ ২০১৪২৭

 

বিশেষ প্রয়োজনেঃ 

আপনার যে কন সময় এম্বুলেন্স সার্ভিস দরকার হতে পারে। যে কোন ধরনের এম্বুলেন্স সার্ভিস পেতে হলে খালেদ এম্বুলেন্স সার্ভিস এ যোগাযোগ করুন। অথবা কল করুন এখনই ০১৯৩৩২৪৬৫৭৭ – এই নাম্বারটি মনে রাখুন অথবা আপনার মোবাইল এ সেভ করুন এখনই। kmosarrof@gmail.com

আমাদের এম্বুলেন্স সার্ভিস ভিজিট করুনঃ https://khaledrentacar.com/ambulance-service/